আজ মঙ্গলবার, ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আইভীকে ভয় তাদের!

সংবাদচর্চা রিপোর্ট

বিএনপি নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার সাথে সাথে পালিয়ে যান শামীম ওসমান ও তার অনুগতরা। ওই সময়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগকে নেতৃত্ব দেন এসএম আকরাম, আনোয়ার হোসেন, সেলিনা হায়াৎ আইভী সহ কয়েকজন। তারা সে সময়ে শামীম ওসমানের দেশে প্রত্যাবর্তনের পক্ষে কথা বলতেন। তবে দেশে ফিরে এজন্য কখনও তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা দেখাননি। বরং ২০১১ সালের নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন থেকে আইভীর পিছু লেগে আছেন তিনি ও তার অনুগতরা।

২০১৫ সালের ১৮ জুন বিদেশি দুটি দাতা সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে নগর ভবনে বৈঠকের সময় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান ফটকের বাইরে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করে শামীম ওসমানের অনুগতরা। মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে ‘আইভীর চামড়া তুলে নেব আমরা’ সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেওয়া হচ্ছিল। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বৈঠক থেকে উঠে মেয়র আইভী কর্মসূচি পালনকারীদের সামনে গিয়ে বলেন, ‘আমি এসেছি, তোমাদের সৎ সাহস থাকলে চামড়া তুলে নাও।’ আইভীর কথা শুনে মানববন্ধনে আসা অনেকে বিব্রত হন। আইভীকে হেয় করতে শহরজুড়ে ফেস্টুন টানানো হয়েছিলো। এসব ফেস্টুনের মাধ্যমে মেয়র আইভীর চরিত্র হননের চেষ্টা চালানো হয়।

                                          শামীমের ময়লা আইভীর ঘাড়ে!

রাজনীতিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে শামীম ওসমান আওয়ামী লীগের সমর্থন পান। ওই সময়ে নাগরিক সমাজের ব্যাণারে নির্বাচন করে লক্ষাধিক ভোটে শামীম ওসমানকে পরাজিত করে মেয়র হন আইভী। ২০১৬ সালের নির্বাচনে আইভীকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। তবে আইভী যাতে মনোনয়ন না পায় তার সব চেষ্টা করেছিলো শামীম ওসমান বলয়। দলীয় সূত্র মতে, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের হেরে যাওয়ার পর থেকেই আইভীর পিছু লাগেন শামীম ওসমান ও তার বলয়। তাকে নিয়ে নানা রকম অপপ্রচার চালাতে থাকেন তারা। যা আজও বন্ধ হয়নি।

                                               তৈমূর কন্যার সাফল্য

বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে পরিচ্ছন্ন গ্রাম-পরিচ্ছন্ন শহর কর্মসূচির আওতায় দেশব্যাপী পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শামীম ওসমান লিংক রোডের পাশে ময়লা আবর্জনার স্তুপ নিয়ে সমালোচনা করেন। এর আগেও দু’একটি অনুষ্ঠানে তিনি এ নিয়ে কথা বলেছেন। তবে তার বক্তব্যের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তিনি যতটা না ময়লা অপসারণের পক্ষে তার চেয়ে বেশী সমালোচনামূখর নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী কে নিয়ে। শুধু ময়লা নয় সুযোগ পেলেই মেয়রকে ইঙ্গিত করে নানা কথা বলেন। যদি বর্তমানে লিংক রোডে ময়লা ফেলা হয় কয়েকটি ইউনিয়ন এলাকার। সদর উপজেলার এসব ইউনিয়ন শামীম ওসমানের নির্বাচনী এলাকার আওতাধীন বলে জানা গেছে।

বিশ্লেকদের মতে, এক সময়ে স্থানীয় রাজনীতিতে বেশ প্রভাবশালী ছিলেন শামীম ওসমান। আইভীর কারনে তা প্রায় নেই বললেই চলে। তাই সুযোগ পেলেই আইভীকে হেয় করতে ছাড়েন না এ রাজনীতিক। তাদের মতে, নাসিক নির্বাচন ও পরবর্তী অবস্থা থেকে শামীম ওসমান, তার ভাই সেলিম ওসমান ভালো করেই আইভীর ক্ষমতা বুঝতে পেরেছেন। মানুষ ও দলের হাই কমান্ডে যে আইভীর গ্রহনযোগ্যতা রয়েছে তাও অনুধাবন করতে পেরেছেন। তাই আইভীকে ভয় পায় তারা। বোদ্ধাদের মতে, এ ধরনের বক্তৃতা দিয়ে আইভীকে শুধু হেয় করা নয় তাকে রাজনীতি থেকে পিছিয়ে দেয়ার একটা চেষ্টাও করা হয়। তবে বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন শামীম ওসমান অনুসারীরা। তাদের মতে, তাদের নেতা শামীম ওসমান সাধারণ মানুষের পক্ষে কথা বলেন।